Site icon নাটোর জিলাইভ | truth alone triumphs

নাটোরে সবুজ ফসলে ছেয়ে গেছে পদ্মার বালুচর

নাটোরে সবুজ ফসলে ছেয়ে গেছে পদ্মার বালুচর,লকলকে সবুজ লতার মাঝে শোভা পাচ্ছে হলুদ ফুল। কোনো কোনো লতার নিচে ঝুলছে সবুজ ফসল। নাটোরের লালপুর উপজেলায় পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা চরের দৃশ্য এটি। প্রায় ১২ বর্গমাইল আয়তনের চরে চালকুমড়ার পাশাপাশি পটোল, করলা, শসার আবাদ হচ্ছে।একসময়ের ধু ধু বালুচরে এখন সবুজ ফসলের সমাহার। চরজুড়ে দেখা মেলে লাউ, কুমড়া, পটোল, ঝিঙার মাচানের। মাঝেমধ্যে চাষ করা হয়েছে ধান, পাট, তিল ও চিনাবাদাম।

 

নাটোরে সবুজ ফসলে ছেয়ে গেছে পদ্মার বালুচর

 

নাটোরে সবুজ ফসলে ছেয়ে গেছে পদ্মার বালুচর

গত শনিবার সরেজমিন বিলমাড়িয়া বাজারঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার চর পাড়ি দিলে আর বালু চোখে পড়ে না। ফসলের সবুজে ঢেকে গেছে বালুচর। চরে ঢুকতেই চোখে পড়ে প্রায় ৯ বিঘা আয়তনের চালকুমড়ার মাচান। মাচানের নিচে ঝুলছে কচি চালকুমড়া। ফসলের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন তিন তরুণ। তাঁদের একজন শাহীন। তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার এই সবজিখেতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন।

চারা রোপণের দুই মাসের মাথায় চালকুমড়া ধরতে শুরু করেছে। প্রতিটি ২৫ টাকা করে পাইকারি দামে বিক্রি করতে শুরু করেছেন তাঁরা। সপ্তাহখানেক পর পুরোদমে কুমড়া তোলা শুরু হবে। এসব কুমড়া ট্রাকভর্তি হয়ে যাবে ঢাকাসহ নানা শহরে।চরের কৃষক নহির বিশ্বাস বলেন, চরে এবার অন্তত দুই হাজার বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে কুমড়া চাষে খরচ হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। অথচ বিক্রি হয় এক থেকে দেড় লাখ টাকা। মাত্র তিন মাসের এই সবজি চাষের প্রতি তাই সবাই ঝুঁকছেন।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

পদ্মার চরে হওয়া চালকুমড়া। নাটোরের লালপুরের বাথানবাড়ি এলাকায়কলাচাষি শিমুল আলী বলেন, চরে জেগে ওঠা মাটি বেলে দোআঁশ প্রকৃতির। তাই এখানে কলাচাষ ভালো হয়। তিনি তিন বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছেন। কলা ধরতে শুরু করেছে। আগামী দুই বছর একটানা এখান থেকে কলা পাওয়া যাবে।

বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ১৯৭২ থেকে ৮৪ সাল পর্যন্ত লালপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের নিমতলী, লালপুর, দিয়ার শংকরপুর, নওসারা সুলতানপুর, আরাজি বকনাই, সেকেন্দারপুর, চাকলা বিনোদপুর, রসুলপুর, মোহরকয়া মৌজার অন্তত ১৭টি গ্রাম পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হন। দীর্ঘদিন পর চর জেগে ওঠায় আবার তাঁরা উর্বর ফসলি জমি ফিরে পেয়েছেন।

 

 

এসব জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সবার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হচ্ছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীভাঙনে এই এলাকার অর্থনীতি একসময় ভেঙে পড়েছিল। এখন চর জেগে ওঠায় অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কৃষি বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর চরকেন্দ্রিক কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছে। এতে চর এখন সবুজ অর্থনীতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি মৌসুমে চর থেকে শুধু কুমড়া বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার।

আরও পড়ুন:

Exit mobile version